সমকালীন ব্যক্তিত্ব নিয়ে উপন্যাস লেখা দুরূহ তো বটেই, কখনো কখনো লেখকের জন্যে বিব্রতকরও বটে। কথাসাহিত্যে এই অ্যান্টি-হিরোর কালে বড়ো মাপের ব্যক্তিত্বকে নায়ক করে উপন্যাস লেখা ব্যতিক্রমধর্মী সাহসের কাজ। অ্যান্টিহিরোদের দুর্বলতা ও অবক্ষয়ের দৌরাত্মে হিরোরা শক্তি ও সাহস নিয়ে কাচুমাচু হয়ে থাকে। হাসনাত আবদুল হাইয়ের প্রেরণা মানুষের শক্তি, মানুষের ক্ষমতা ও মানুষের সাহস। প্রতিভাবান, শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব নিয়ে উপন্যাস লেখার উদ্যোগ হাসনাত আগেও নিয়েছেন এবং তাঁদের আবেগ ও প্রেরণা, স্বভাব, ভাবনা এবং ক্ষোভ ও বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করার জন্যে উপন্যাসের প্রচলিত রীতির বাইরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে হাসনাত আলাপ করেন, দিনের পর দিন তাঁদের কথা শোনেন। তিনি নিজেও কথা বলেন, কেবল প্রশ্ন করা নয়, মতামত দেন, মন্তব্য করেন এবং এইসব সংলাপেই পাঠক আরজ আলীর সংশয়, তাঁর বিদ্যাচর্চা, সংকট, তাঁর লেখা, লেখা ছাপা, বই প্রকাশ, বইয়ের প্রচার প্রভৃতি বিষয়ে জানতে জানতে নায়ককে চিনতে পারেন। বলতে গেলে এইসব সংলাপের বিন্যাসেই গড়ে ওঠে উপন্যাস। - আখতারুজ্জামান ইলিয়াস