পপুলিজমের এ যুগে বাংলা সাহিত্যটাও খুব পপুলিস্ট হয়ে গেছে। যেহেতু পাঠকদের বৃহৎ অংশ শহুরে, তাই আজকাল ব্রাত্যসাধারণের আটপৌরে জীবনের জঞ্জাল দিনকে দিন এসকেপিস্ট সাহিত্য থেকে খসে পড়ছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এতই দুঃখ যে বেশিরভাগই সাহিত্যে মুখ গুঁজে এখন হাসির রসদটা বেশি খোঁজে। এসব এসকেপিস্ট পপুলিস্ট সাহিত্যের গণ্ডি ছেড়ে বৃহত্তর জীবনের নিত্যদিনকার বিষাদভাবনার উদ্গার ঘটেছে ইসহাক হাফিজের এ বইয়ে। প্রতিটি গল্পের পর খুব ‘মানুষ’-স্বপ্ন জাগে মনে।
সরদার ফজলুল করিম বলেছিলেন, ইতিহাস আর সাহিত্যে পার্থক্য হলো ইতিহাসে শুধু কোন রাজার কোন কীর্তি, কত সালে জন্ম-মৃত্যু, কখন তিনি কী করেছেন-সেই সব পাওয়া যায়। আর সেই তুলনায় সাহিত্যে পাওয়া যায় একটা সমাজের সার্বিক চিত্র। যেমন : পথের পাঁচালী দিয়েছে হরিহর রায়, ইন্দির ঠাকরুন, সর্বজয়া, অপু-দুর্গাদের সক্লেশে বয়ে নেওয়া জীবনকে। আর এটাই সাহিত্যের মূল। লেখক এ বইয়ে তেমনই আধুনিক নগর ও গ্রামীণ জীবনের কিছু গল্প তুলে এনেছেন, যেসব গল্প আমাদের খেয়ালের বাইরেই থেকে যায়। লেখক এখানে আমাদেরই জীবন থেকে তুলে এনেছেন সেই সব ‘বেদনার গাঢ় রস’।
-নাজিব হায়দার