সকল বই

সুন্দর এই পৃথিবী আমার

সুন্দর এই পৃথিবী আমার

Author: আফরোজা বুলবুল
Delivery Time: 3-7 Days , Cash on Delivery Available
  • বই উপহারঃ বই উপহারঃ
    বিস্তারিত
  • বই উপহার.. বই উপহার..
    বিস্তারিত
  • কম্বো অফারঃ কম্বো অফারঃ
    বিস্তারিত
  • কম্বো অফার.. কম্বো অফার..
    বিস্তারিত
  • ফ্রি ডেলিভারিঃ ফ্রি ডেলিভারিঃ
    বিস্তারিত
Price: ৳1100.00 ৳ 880.00 (20.00 % off)
Available Stock
+ Add to Wishlist
Publisher অ্যাডর্ন পাবলিকেশন
ISBN9789842004483
Edition2015, 1st Published
Pages414
Reading Level General Reading
Language Bangla
PrintedBangladesh
Format Hardbound
Category জীবনী-আত্মজীবনী-স্মৃতিকথা
Return Policy

7 Days Happy Return

সুন্দর এই পৃথিবী আমার বই নিয়ে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান যা বলেন- বুলবুল চৌধুরীর মৃত্যু হয় মাত্র পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে, কিন্তু এরই মধ্যে তিনি অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। চিত্রাঙ্কনে তাঁর আগ্রহ ছিল, সাহিত্যকর্মে তিনি সাফল্য লাভ করেছিলেন, তবে তাঁর প্রতিভার শ্রেষ্ঠ স্ফুরণ ঘটেছিল নৃত্যশিল্পে। বাঙালি মুসলমান সমাজে তিনিই সর্বপ্রথম এক্ষেত্রে প্রবেশ করেছিলেন। তাই পথিকৃতের গৌরব যেমন তিনি লাভ করেছিলেন, তেমনি তাঁর ভাগ্যে জুটেছিল ধর্মান্ধদের বিরূপতা। পাকিস্তান সৃষ্টির পর কূপমণ্ডূকদের এই বাধা বোধ হয় আরও প্রবল হয়েছিল। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছিল নতুন সংকট। বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি যে বৈরী মনোভাব রাষ্ট্রীয় নীতির অবিচ্ছিন্ন অংশে পরিণত হয়েছিল বুলবুল চৌধুরীকে তা কম পীড়িত করেনি। ১৯৫০ সালে করাচিতে প্রদত্ত এক ভাষণে তাই তিনি পাকিস্তানকে বহুজাতি ও বহু সংস্কৃতির দেশ বলে অভিহিত করে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন, ‘একজন সামান্য বাঙালি শিল্পী বলে। তিনি বলেছিলেন যে, ইসলাম পাকিস্তানি সংস্কৃতির একটি উপাদান হলেও তা একমাত্র ও প্রধান উপাদান নয়। ঐ ভাষণে তিনি সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, সকল বিভিন্নতা সত্ত্বেও এক ভবিষ্যৎ রচনার জন্য জনগণের সম্মিলিত প্রয়াসই এই নবীন রাষ্ট্রের প্রকৃত বন্ধন রচনা করেছে। বুলবুল চৌধুরীর শিল্পকর্মেও আমরা এই ভাবের প্রতিফলন লক্ষ করি। একদিকে তিনি বহির্বঙ্গের সেই সংস্কৃতিধারার উপকরণ গ্রহণ করেছিলেন, এদেশের মুসলমান যাকে মুসলিম ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত করে দেখে; অপরদিকে তিনি বাংলার লোকজ ঐতিহ্য আত্মসাৎ করেছিলেন, যা ছিল সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সাধারণ সম্পদ। তাঁর নৃত্যশিল্পে ধরা পড়েছিল নতুন যুগচেতনা; মানুষের উপর মানুষের শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। শিল্প যে বৃহত্তর লোকসমাজের জীবনকে প্রতিফলিত করবে শুধু তাই নয়, সেই সমাজের জীবনধারার উন্নয়নেও সাহায্য করবে- এই মতে তাঁর দৃঢ় আস্থা ছিল। বুলবুল চৌধুরীর প্রতিভার পূর্ণ বিকাশের আগেই তাঁকে হারিয়েছি। এখন তাঁর স্মৃতি বহন করছে প্রত্যক্ষভাবে বুলবুল ললিতকলা একাডেমী ও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের সকল নৃত্যশিল্পী। বুলবুল চৌধুরীর মৃত্যুর পর আফরোজা বুলবুল নিবেদিত থাকেন নৃত্যশিল্পে। বুলবুল চৌধুরীকে নিয়ে তাঁর স্মৃতিচারণ আমাদের শিল্প-সংস্কৃতির জগতে মহামূল্যবান। ব্যক্তি বুলবুলের পরিচয়ের পাশাপাশি বইটিতে রয়েছে আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাস রচনার নানা উপকরণ। তাঁর স্মৃতিকথা সুন্দর এই পৃথিবী আমার আমাদের সমাজের জন্য তো বটেই, পাঠকের জন্যও বড় প্রাপ্তি। -আনিসুজ্জামান এমিরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সুন্দর এই পৃথিবী আমার বই ভুমিকায় নার্গিস বুলবুল চৌধুরী যা বলেন- আমার মা আফরোজা বুলবুল চৌধুরী। প্রথিতযশা নৃত্যশিল্পী বুলবুল চৌধুরীর স্ত্রী। বুলবুল একাডেমী অব ফাইন আর্টস (বাফা)-এর প্রতিষ্ঠাতা। বাবার স্বপ্ন ছিল তাঁর সকল কীর্তি তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেবেন, একটি প্রতিষ্ঠান গড়বেন। কিন্তু বাবার সেই স্বপ্ন সফল হয়নি। তিনি চলে গেলেন। এরপর মা চাইলেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে। তিনি ঢাকায় এসে বাফা প্রতিষ্ঠা করলেন। তিনি আমাকে সবসময় বলতেন, বাবার সকল স্মৃতি লিপিবদ্ধ করে যাবেন। কিন্তু মা স্মৃতিকথা লেখা শেষ করতে পারলেন না। ১৯৯০ সালে তিনিও হঠাৎ করে চলে গেলেন। অগত্যা আমি আমার পরম আরাধ্য বাবা-মায়ের সম্মানে এই স্মৃতি সংরক্ষণের সকল দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলাম মা’র একান্ত ইচ্ছা অনুযায়ী, যা তিনি বাবার মৃত্যুর পর করতে চেয়েছিলেন এক অজানা ভবিষ্যৎকে সামনে রেখে নানা বাধা-প্রতিবন্ধকতার মুখে। বাংলাদেশ তথা ভারতবর্ষের মানুষের কাছে বুলবুল চৌধুরী এখনও এক জীবন্ত কিংবদন্তি। নৃত্য ও শিল্পকলায় তাঁর সৃষ্টি এখনও অনুপ্রেরণা জোগায় অসংখ্য মানুষকে। তাঁর জীবনকাল ছিল মাত্র ৩৫ বছরের। এরই মধ্যে শিল্পী ও শিল্পস্রষ্টা হিসেবে রেখে গেছেন অবিস্মরণীয় কীর্তি। চিত্রাঙ্কন ও সাহিত্য রচনায়ও তাঁর আগ্রহ ছিল, যদিও প্রতিভার সার্বিক স্ফুরণ ঘটেছিল নৃত্যশিল্পে। দৈর্ঘ্যরে দিক দিয়ে হয়তো স্বল্পস্থায়ী ছিল তাঁর জীবন; কিন্তু গভীরতা, কীর্তি ও তাৎপর্যে তা ছিল সমুদ্রসম। এমন একজন মানুষের সহধর্মিণী ছিলেন আমার মা। বাবার জীবনের উত্থান ও পতনে, অর্জন ও সংগ্রামে ছায়ার মত পাশে থেকেছেন সবসময়। জীবনসায়াহ্নে এসে তাঁর স্মৃতিকথা সুন্দর এই পৃথিবী আমার লিখতে শুরু করেছিলেন মা। শিরোনামটি থেকে বোঝা যায়, তাঁর এই স্ন্দুর পৃথিবীটি ছিল বুলবুল চৌধুরী। তাঁর সমস্ত আবেগ আর স্বপ্নসাধ ডানা মেলেছিল বুলবুল চৌধুরীকে ঘিরেই। চেয়েছিলেন সেসব কথা লিখে যাবেন ভাবীকালের মানুষের জন্য। কাজটি অনেক দূর এগিয়ে নিলেও শেষ করে যেতে পারেননি। বাবা-মা’র সন্তান হিসেবে মায়ের অসমাপ্ত স্মৃতিকথা সমাপ্ত করার দায়িত্ব তাই নিজের কাঁধে তুলে নিলাম। জানি, হৃদয়ের সমস্ত আবেগ দিয়ে যে অতুলনীয় ভঙ্গিতে মা তাঁর স্মৃতিকথা লিখেছিলেন, সেই ভঙ্গি বা আবেগ পুরোপুরি হয়তো অনুসরণ বা ধারণ করতে পারব না। হতে পারে, মা’র স্মৃতিকথায় কলমের শেষ আঁচড় দেয়ার চেষ্টা হয়তো ঔদ্ধত্য হয়ে যাচ্ছে-তবু জেনেশুনেই সে ঔদ্ধত্যের দায় নিলাম। বাবাকে নিয়ে মা’র মত এক মানুষের স্মৃতিকথা রচনার ভাগীদার হওয়ার মধ্যে যে অহঙ্কার আছে সেটি ধারণ করার লোভও সংবরণ করতে পারলাম না। আমার মা যেভাবে চেয়েছিলেন হয়তো পুরোপুরি সেভাবে লিখতে পারব না। তবে স্মৃতির সাগর সেঁচে মুক্তো তুলে আনার চেষ্টা আন্তরিকভাবেই করেছি-এটি বলতে পারি। মা বইটি উৎসর্গ করে যাননি। বর্তমান সময়ে মা কী করতেন জানি না। অনেক ভেবে তাঁর বইটি উৎসর্গ করছি তাঁদের প্রিয় সন্তান আমাদের ভাই ফরিদকে, কিছুদিন আগে যে প্রয়াত হয়েছে। আজ ছোটভাই ফরিদকে আরেকটি বিষয়ের জন্য স্মরণ করছি। মা-এর এই বইয়ের প্রচ্ছদ তৈরিতে আমি যখন কাজ করছিলাম, আমাকে সে-ই বিশেষভাবে সহযোগিতা দিয়ে প্রচ্ছদটি তৈরি করেছিল। বইটি পড়ে শিল্পী বুলবুল চৌধুরীর জীবন ও কীর্তি সম্বন্ধে যদি কারও কৌতূহল মেটে, শিল্পের সাধনায় তাঁর জীবনভর সংগ্রামের গল্প যদি কারও মনে প্রেরণা জাগায় তাহলেই আমার মায়ের স্বপ্ন সার্থক হবে। এর বেশি আর কিছুই চাওয়ার নেই। বইটির পাণ্ডুলিপি প্রথম সম্পাদনা করেন বিশিষ্ট লেখক গবেষক ড. সরোজ মোহন মিত্র, যিনি কোলকাতায় বাস করেও এই কষ্টসাধ্য কাজটি করে আমাদের ঋণী করেছেন। আমাদের পরিবার তাঁর কাছে বিশেষ ঋণী। পাঁচ বছর ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম বাবার মাতৃভূমি বাংলাদেশ থেকে বইটি প্রকাশ করতে। বার বার বাধাগ্রস্ত হয়েছি নানাভাবে। তারপরও মায়ের ইচ্ছা পূরণ অনেক দিন পর সম্ভব হল অ্যাডর্নের সহযোগিতায়। পাণ্ডুলিপি প্রকাশে যাঁরা বিভিন্নভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছেন আমি তাঁদের ঋণ শোধ করতে পারব না। তবে পাঠকের সামনে এই বই তুলে দিতে পেরে তাঁদের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞ। পাঠক গ্রহণ করলেই আমাদের প্রয়াস সার্থক হবে। ঢাকা, নার্গিস বুলবুল চৌধুরী নভেম্বর ২০১৪

0 review for সুন্দর এই পৃথিবী আমার

Add a review

Your rating