মাত্রই উনত্রিশ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন মৃণালিনী দেবী, কিন্তু রবীন্দ্রনাথের মন থেকে কোনওদিনই বিদায় ঘটেনি তাঁর। যৌবনে মানসীরূপে ও মৃত্যুতে অধরা বেশে জীবন-মৃত্যুর দুটি বাহু দিয়ে কীভাবে এবং কোন সার্থকতায় রবীন্দ্রনাথের জীবন ও কাব্যকে বেঁধে রেখেছিলেন কবিপত্নী মৃণালিনী দেবী, তা নিশ্চিত জরুরি ও কৌতূহলকর এক প্রসঙ্গ। তবু এ-নিয়ে আলোচনা কমই হয়েছে। প্রজ্ঞাপারমিতা বড়ুয়ার এই গ্রন্থ সেই স্বল্পালোকিত বিষয়েরই গুরুত্বপূর্ণ গুণ্ঠন-উন্মোচন। যাঁর লেখার ধারা জীবনধারার সঙ্গে আশৈশব গ্রথিত এক অবিচ্ছিন্ন সূত্রে, সেই রবীন্দ্রনাথের প্রাসঙ্গিক কাব্যগ্রন্থাবলির আনুপূর্ব বিশ্লেষণ করে, আনুষঙ্গিক সমূহ রচনা, চিঠিপত্র এবং সমকালীন স্মৃতিসাক্ষ্য মন্থন করে কবিপত্নী মৃণালিনীর এক পূর্ণাঙ্গ মূর্তি নির্মাণ করেছেন তিনি, নতুন আলো ফেলেছেন রবীন্দ্রসাহিত্যের উপরেও। সৎ পাঠকের রসগ্রাহিতার সঙ্গে পরিশ্রমী গবেষকের এক সুস্মিত সংমিশ্রণ তাঁর আলোচনাভঙ্গিতে। তাই তথ্যবহুল হয়েও স্বাদু ও সরস এই গ্রন্থ।