বিশ্ব ফুটবলের দুনিয়াকাঁপানো কিংবদন্তি ছিলেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। ফুটবলের ইতিহাসে একইসঙ্গে এত নন্দিত ও নিন্দিত তারকা বোধহয় দ্বিতীয় অন্য কেউ নেই। মাত্র ৬০ বছর বয়সে পরপারে চলে গেলেন আর্জেন্টাইন এই বিস্ময়প্রতিভা। ঘটনাবহুল, নাটকীয়তায় ভরপুর, বৈচিত্র্যম-িত চমকপ্রদ জীবন ছিল তাঁর। ফুটবলকে জনপ্রিয় করে তুলতে অসামান্য অবদান তিনি রেখে গেছেন। বিশ্বফুটবলের আরেক মহানায়ক ব্রাজিলের পেলে। ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর মর্মাহত পেলের মন্তব্য ছিলঃ আমি সত্যিকারের এক বন্ধু হারালাম। বিশ্ব হারালো এক কিংবদন্তিকে। আশা করি, একদিন আমরা ওপারে একসঙ্গে ফুটবল খেলব।
ম্যারাডোনার অন্তিমযাত্রায় ফুলের মুকুট পাঠিয়েছিলেন পেলে। হারানো সুহৃদ সম্পর্কে
তিনি আরো মন্তব্য করেছেনঃ ‘ঈশ্বর তাকে প্রতিভা দিয়েছিলেন। আর মানুষ তাকে ভালোবেসেছিল।’ ফুটবলের বিশ্ব সংস্থা ফিফা’র অনলাইন ভোটাভুটিতে ম্যারাডোনা পেয়েছিলেন ৫৪ শতাংশ ভোট। আর পেলের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল শতকরা ১৮ ভাগ ভোট। শেষে ফিফা তাঁদের দু’জনকেই যুগ্মভাবে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ দুই ফুটবলার হিসেবে ঘোষণা করে।
আমৃত্যু বিপ্লবী ছিলেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। ছিলেন বাম পায়ের শিল্পী। বাম ঘরানার পথিক। তাঁর ঘনিষ্ঠ হৃদ্যতা ছিল কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল ক্যাস্ত্রো, ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের সঙ্গে। রক্তাক্ত ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য ছিল তাঁর অকৃত্রিম দরদ ও ভালোবাসা। বলেছিলেন তিনিÑ‘ফিলিস্তিন আমার হৃদয়ে। আমি নিজেও ফিলিস্তিনী।’ ইসরাইলের দখলদারিত্বের তীব্র নিন্দা সমালোচনা করে ফিলিস্তিনীদের স্বাধীনতাসংগ্রামের অকুণ্ঠ সমর্থন করে গেছেন তিনি।
ম্যারাডোনার অনেক উক্তি বেশ স্মরণীয়। তিনি বলেছেন, ‘আমি যদি মরে যাই, তবে একজন ফুটবলার হিসেবে আবার জন্মাতে চাই। আবারও আমি দিয়েগো আরমান্ডো ম্যারাডোনা হতে চাই।’ ‘দারিদ্র্য খুব খারাপ, খুব কঠিন। এর সব রূপ দেখা হয়ে গেছে আমার। ইচ্ছা করে অনেক কিছু পেতে, কিন্তু সেসব শুধু স্বপ্নেই সম্ভব। খুব ভালো হতো, যদি দুনিয়ায় সাম্য থাকতো।’