গান্ধারী-ধৃতরাষ্ট্রের শতপুত্রের অন্যতম বিকর্ণ সেই অনন্যতম, অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে যিনি প্রতিবাদে মুখর, মানুষের অপমানে-অসম্মানে যিনি শোচনাদগ্ধ। বিকর্ণ মানুষের চিরন্তন বিবেক। বিকর্ণের জীবনকাহিনী বিবেকেরই জয়গাথা। মহাভারতের এই উপেক্ষিত চরিত্রটিকেই তাৎপর্যপূর্ণ মহিমায় উদ্ভাসিত করেছেন এ-যুগের বিবেকবান কথাকার হর্ষ দত্ত। মহাভারতের এক স্মরণীয় তবু স্বল্পপরিচিত চরিত্র বিকর্ণ। গান্ধারী-ধৃতরাষ্ট্রের শতপুত্রের অন্যতম, বীর, সাহসী ও সর্বোপরি সত্যপ্রিয় বিকর্ণ অনন্যতম হয়ে উঠেছেন সভাপর্বে, যেখানে কুরুকুলে একমাত্র তাঁকেই দেখি শুভবোধের অবিচল প্রতীক হয়ে প্রতিবাদ করছেন পাঞ্চালীর লাঞ্ছনার। জিতা না অর্জিতার-দ্রৌপদীর এই উদ্যত প্রশ্নের সামনে যখন প্রত্যেকে বিমূঢ়, একমাত্র ন্যায়নিষ্ঠ এই ধার্তরাষ্ট্রকেই দেখি বিচারপ্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন দ্রুপদনন্দিনীর সপক্ষে। মানুষের চিরন্তন বিবেকের প্রতিভূ এই বিকর্ণকেই স্বমহিম প্রাসঙ্গিকতায় ফিরিয়ে এনেছেন হর্ষ দত্ত। সভাপর্ব থেকে বিকর্ণ-জীবনের অন্ত্যপর্ব পর্যন্ত যে সমূহ উপাদান ছড়িয়ে ছিল সমগ্র মহাভারতে, অনুপুঙ্খ অনুসন্ধানে তাকেই একত্র করে, কল্পনা ও ভাষার অসামান্য প্রয়োগকৌশলে, তিনি এঁকেছেন বিকর্ণের জীবন-কাল ও সমাজ-সংস্কৃতির এক অনন্য প্রতিচিত্র।