হারুন পাশার লেখায় বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। প্রথমত, উপন্যাসে লেখকের উপস্থিতি নেই। দ্বিতীয়ত, চরিত্ররাই উপন্যাসের শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত বলে যাচ্ছে গল্প। যে গল্পে থাকে দেশ, সমাজ, মানুষের সংকটের কথা। তৃতীয়ত, কাহিনির ধারাবাহিকতা রক্ষায় সেতু হিসেবে ব্যবহৃত হয় ‘সংযুক্তি’। চতুর্থত, উপন্যাসে থাকে অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন। পঞ্চমত, আখ্যানে থাকে কোনো না কোনো সংকটের উপস্থাপন।
পাশার ‘তিস্তা’ এবং ‘চাকরিনামা’র পর ‘বদলে যাওয়া ভূমি’ উপন্যাসেও এই বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষণীয়। ‘বদলে যাওয়া ভূমি’ উপন্যাসে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত করোনা মহামারির কারণে দেশ এবং সারাবিশে^ যে অর্থনৈতিক-সামাজিক সংকট তৈরি হয়েছে তার যেমন অনুপুঙ্খ বিবরণ আছে, তেমনি বিশ^নেতার চেয়ার বদলের কথাও এসেছে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক রাজনীতির পট পরিবর্তনের চিত্রও দৃশ্যমান। চরিত্র কেবল দেশ নয়, বহির্বিশ^ নিয়েও চিন্তিত। সামষ্টিক চেতনার ধারক এ উপন্যাস।
এ উপন্যাসে আছে করোনাক্রান্ত ভূমির সঙ্গে করোনামুক্ত ভূমিও। উপন্যাসের শেষে চরিত্র করোনামুক্ত ভূমিতে আনন্দ করে।
এ উপন্যাস মানব মন, সমাজ, স্বদেশ-বহির্বিশ্বের অলিগলিতে আলো ফেলে ময়নাতদন্ত করে বের করেছে ভেতরের গলদ। নি¤œবর্গ, নি¤œমধ্যবিত্ত- মধ্যবিত্তের টানাপোড়েন, আর্তনাদ, বৈষম্য, বঞ্চিতের আন্দোলন-প্রতিবাদ, প্রকৃতির সজীব- সতেজতা, সম্ভাবনা সবই উপস্থিত এ উপন্যাসে। জীবন, জগৎ কিংবা প্রকৃতির সার্বিক অবস্থার চালচিত্র ‘বদলে যাওয়া ভূমি’।