দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে লেখা উপন্যাস প্রাচী। তৎকালীন কসমোপলিটন শহর বার্মার রেঙ্গুন-এ চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও কলকাতার অসংখ্য মানুষ বাস করতেন। জাপানি বোমারু বিমানের আগ্রাসনে সেইসব মানুষদের বিপন্ন, বিদীর্ণ, বেদনার্ত, অসহায়-পাণ্ডুর জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন ঔপন্যাসিক বুলবুল চৌধুরী দক্ষ হাতে। যানবাহনের অভাবে শত শত নারী-পুরুষের পায়ে হেঁটে দেশে ফিরে আসার মর্মান্তিক দৃশ্য শব্দের ছবিতে শিল্পের মগ্নতায় ধারণ করেছে প্রাচী। দেখিয়েছে শান্ত নির্মল জীবনে যুদ্ধ কী ভয়ংকর অভিশাপ হয়ে আসে। ধ্বংসের পাশাপাশি প্রাচী উপন্যাসে বুলবুল মানুষের মহত্ত্ব অংকন করেছেন গভীর মমতায়। যদিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে অনেক আগে কিন্তু যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে পৃথিবী এখনও মুক্ত নয়। বরং দেশে দেশে যুদ্ধ এখন মানুষের জীবনকে নরকে পরিণত করেছে। এই পটভূমিতে ১৯৪২ সালে লেখা নৃত্যশিল্পী বুলবুল চৌধুরীর মানবিকবোধের আখ্যান প্রাচী আরও প্রাসঙ্গিক।
মনি হায়দার
কথাসাহিত্যিক