‘প্রতিদ্বন্দ্বী' উপন্যাসের কাহিনিকাল আদিমযুগ থেকে বর্তমান পর্যন্ত ছড়ানাে। মানুষের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয়েছে সেই আদিমকাল থেকে। অর্থ, সামর্থ্য, ভূমি, নারী—এসবের জন্য মানুষের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলেছে, চলছে, চলবে। সেই চিরন্তন দ্বন্দ্বকে লেখক কাহিনির মােড়কে উপস্থাপন করেছেন এই। উপন্যাসে। দ্বন্দ্ব আছে পরিবারে, দ্বন্দ্ব সমাজে, দ্বন্দ্ব রাজনীতি-অর্থনীতি-ধর্মনীতিতে। দিন দিন এই দ্বন্দ্ব প্রকট হচ্ছে। দ্বন্দ্ব-প্রকটুতা মানুষের ভেতরের। মূল্যবােধকে গ্রাস করছে নিত্যদিন। তাই স্ত্রী। শ্রাবণীর কাছে তনয় অসহায়, ধন-লালসার কাছে অমিতাভ বিকিয়ে যান। প্রতিমা নামের বীরাঙ্গনা, যিনি খালি পায়ে হেঁটে হেঁটে স্বাধীনতা বিরােধীদের মুখে পদাঘাত করে যাচ্ছেন, মিহির দাস নামের একজন ভূমিলােভী তার মহত্বময় সত্তাকে বিচূর্ণ। করতে উদ্যত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি প্রতিমা পরাস্ত হবে? একজন বীরাঙ্গনার মানমর্যাদা কি ধুলায় মিশিয়ে দিতে পারবে মিহির দাস?
হরিশংকর জলদাসের প্রতিদ্বন্দ্বী’ উপন্যাসে আছে এইসব প্রশ্নের উত্তর। এই উপন্যাসের পরিণতিতে ধ্বনিত হয় মানবতা আর স্বাধীনতার জয়গান। হরিশংকর উপন্যাসকার হিসেবে আজ প্রথিতযশা। তাঁর প্রতিটি উপন্যাস পাঠককে জীবনের গভীর অভিজ্ঞতার মুখােমুখি দাঁড় করায়।