নিজেকে ‘রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের নিবেদিতা’ হিসেবে উল্লেখ করতে ভালবাসতেন তিনি ঠিকই, কিন্তু নিবেদিতার এই আন্তরিক আত্মনিবেদনের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেও বলতে হবে, এই পরিচয়ের মধ্যে এক সীমাবদ্ধতা আছে। এবং অদ্যাবধি নিবেদিতাচর্চা অনেকটাই এই সীমাবদ্ধতায় আক্রান্ত। তাঁর আচার্য মার্গারেট এলিজাবেথ নোবলের নামকরণ করেছিলেন ‘নিবেদিতা’। তিনি আক্ষরিক অর্থেই ‘নিবেদিতা’— তাঁর আদর্শের প্রতি, তাঁর গুরুর শিক্ষার প্রতি, তাঁর প্রিয় ভারতবর্ষের প্রতি। দার্জিলিংয়ের নির্জন শ্মশান প্রান্তরে তাঁর অনাড়ম্বর স্মৃতিস্তম্ভটিতে যেমন লেখা— ‘HERE REPOSES SISTER NIVEDITA WHO GAVE HER ALL TO INDIA’। এত সংহত, সত্য এপিটাফ বড় দুর্লভ। নিজেকে উজাড় করে ভারতবর্ষের বিজ্ঞান, সাহিত্য, শিল্প, রাজনীতি, ধর্মচেতনা, সাংবাদিকতা ইত্যাদি বহুতর ক্ষেত্রকে ভগিনী নিবেদিতা সমৃদ্ধ করে গেছেন নিঃস্বার্থে। তাঁর সেই বহুমুখী বিচ্ছুরণ ও তার শেকড় তথা প্রেক্ষিতকে ধরার প্রয়াসে এই পরিক্রমণ।