উত্তরবঙ্গের পার্বত্য নদী তিস্তার সঙ্গে লেখকের আত্মার আত্মীয়তা আজন্ম। এই নদীর সান্নিধ্যে তাঁর শৈশব, কৈশোর অতিবাহিত হয়েছে। তিস্তা তাঁর কাছে শুধু এক দূর-বিস্তৃত জলপ্রবাহিণী নয়, এ-নদী তাঁর জীবনজিজ্ঞাসার প্রতিরূপ। নদীর স্রোতের মধ্যে লেখক, জীবনের ভাঙাগড়ার তরঙ্গভঙ্গ দেখেছেন।এ-উপন্যাস যেমন লেখকের জীবনালেখ্য নয়, তেমনি কাল্পনিক কোনও বিচরণক্ষেত্রের আখ্যানও নয়। তিস্তার জলের দর্পণে যে-মুখগুলির ছবি প্রতিবিম্বিত হয়েছে সে-মুখগুলি তাঁর শৈশব আর কিশোরকালেরই পরিচিত মুখ।উত্তরবঙ্গের শান্ত সমাহিত জীবনযাত্রার মতোই এ-উপন্যাস সহজ, সরল ভাষায় ঋজু গতিতে বহমান। এই কাহিনিতে লেখকের অন্তর্লোকের আলোছায়ায় একটা স্বপ্ন যেন দীর্ঘ হয়ে, নদীর স্রোতের সঙ্গে যেতে যেতে এক অচিন সময়ের মধ্যে মিশে যায়। ইচ্ছেপূরণের দাবিটা কোনও উজ্জ্বল আগামী দিনের অপেক্ষায় থেকেই যায়। সমস্ত উপন্যাসকে ছায়াচ্ছন্ন করে রেখেছে এক মেঘলা আকাশ। নদীর সঙ্গে জীবনকে সম্পৃক্ত করে, একটি ছেলের জীবনের গতিপথ প্রবহমান থাকার এক মেদুর কাহিনি এই উপন্যাস।