আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য একদা ‘বাচস্পতি’ ছদ্মনামে ‘দেশ’ পত্রিকায় ‘নামরহস্য’ শীর্ষক একটি ধারাবাহিক রচনা লিখেছিলেন। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই সেই রচনা বিদ্বৎসমাজে এবং পাঠকমহলে দারুণ সাড়া জাগিয়েছিল। বিভিন্ন পশু, পাখি, সরীসৃপ ও জলজ প্রাণীদের যেসব নাম প্রচলিত এবং সাহিত্য ও শাস্ত্রে লিখিত আছে, তাদের গভীর অধ্যায়ন ও নিষ্ঠায় সংগ্রহ করে এই কৌতুহলোদ্দীপক রচনাটি লিখেছিলেন লেখক। ইতর প্রাণীকুলের নামের উৎস, ব্যুৎপত্তি ও প্রায়োগিক দিকটি সুনিপুণভাবে বিশ্লেষণ করে লেখক সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। যেমন মহিষ—এই নাম-শব্দটির বিন্যাস, তার ব্যুৎপত্তি, অর্থ এবং মহিষের অন্যান্য নাম (লুলাপ, কসের, সৈরিভ) সম্পর্কে এই জাতীয় নিবিড় নানা আলোচনা ছিল সেই রচনার মূল উপজীব্য। যদিও তাঁর অনেক বক্তব্য তখন বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। বর্তমান গ্রন্থটি লেখকের সেইসব অগ্রন্থিত রচনার সংকলন। রচনাটি যেহেতু জীবজন্তুর নাম বিশ্লেষণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, তাই বর্তমান গ্রন্থটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘জীবজন্তুর নামরহস্য’। রচনাগুলি প্রকাশের সময় যে-বিতর্ক গড়ে উঠেছিল, সেই পরিমণ্ডলটি একালের পাঠকদের সামনে তুলে ধরার জন্য ‘প্রসঙ্গকথা’ অংশে বিরুদ্ধবাদীদের যুক্তি ও বাচস্পতির উত্তর—দুই-ই সন্নিবেশিত হয়েছে।