সে – মানে একটি প্রাণ। অসমাপ্ত কর্মসম্পাদনের জন্য আরও একটি জন্ম অতিবাহিত করতে তাকে আসতেই হবে পৃথিবীতে। ধারণ করতে হবে রস-রক্ত মাস-মজ্জা শুক্র-অস্থি সমম্বিত মনুষ্য শরীর। বিধাতা তাকে তেমনই নির্দেশ দিয়েছেন। পরম পিতা অবশ্য এই স্বাধিকারটুকু তাকে মঞ্জুর করেছেন যে, আগামী জন্মের মাতৃগর্ভ সে নিজেই নির্বাচন করে নিতে পারবে। তবে হাতে মাত্র এক রাত্রির সময় সীমা। কিন্তু কোন দম্পতিকে সে নির্বাচন করবে? মধ্যরাত্রে সে তাই খুঁজে বেড়াচ্ছে তার উপযুক্ত জননী জঠর। এমনই এক আশ্চর্য অন্বেষণ থেকে শুরু হয়েছে সমরেশ মজুমদারের এই স্বতন্ত্র স্বাদ উপন্যাস। তিনি এর প্রথম পরিচ্ছেদের নাম রেখেছেন, বোধন। গর্ভগৃহে অবস্থান ও জন্ম থেকে শুরু করে ক্রমপরিণতির সঙ্গে মিলিয়ে পরবর্তী পরিচ্ছেদের নাম যথাক্রমে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী। পরিচ্ছেদ-শিরনামার মতোই আদ্যন্ত চমকপ্রদ এই উপন্যাস। এই ‘কুলকুণ্ডলিনী’, যার সমাপ্তি আসলে আরেক আরম্ভেরই সূচনা। শরীরের মূলাধারে নিদ্রিত শক্তিকে জাগ্রত করার সাধনায় যা করে উদ্বুদ্ধ।