কলকাতার ইতিহাস স্বল্পকালের-অন্তত জানা-ইতিহাস তো স্বল্পকালের বটেই। তবু এই স্বল্পকালের ইতিহাস ঘটনা আর কাহিনীতে ভরপুর, স্মৃতিমেদুর। এই স্বল্পকালের প্রথমদিকে কলকাতা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছে একটি সাম্রাজ্য গড়ে ওঠার কাহিনী, উপভোগ করেছে সাম্রাজ্যের বিক্রম, কিন্তু তারপর, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যলক্ষ্মী বিমুখ হলেন কলকাতার প্রতি এবং রাজধানী স্থানান্তরিত হল কলকাতা থেকে।কলকাতার ইতিহাসের সামগ্রিকতার ব্যাপ্তি কিন্তু রাজনীতি ছাড়িয়ে বহুদূর বিস্তৃত। এই শহর নবজাগরণের সূতিকাগার। এই শহরে নবজাগরণের প্রভাবে শিক্ষা-সংস্কৃতি-শিল্পসমাজ-সাহিত্যের জগতে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে তার ঢেউ গিয়ে পৌঁছেছে ভারতের প্রত্যন্ত প্রান্তে। ব্রিটিশ শাসকদের পৃষ্ঠপােষকতার ফলে এই শহরের এক শ্রেণীর মানুষের হাতে প্রচুর ধন-সম্পত্তি এসে জমা হয়েছিল— ফলে গড়ে উঠেছিল এক ক্ষয়িষ্ণু জীবনধারা যা ‘বাবু-কালচার’ নামে পরিচিত।কলকাতার এই বিভিন্ন দিশার পরিচয় দিয়েছে অনেক গ্রন্থ, অনেক গবেষণা। কিন্তু বহু মনোরম এবং জ্ঞাতব্য তথ্য থাকা সত্ত্বেও কলকাতা নিয়ে বোধহয় কোনও কুইজের বই তৈরি হয়নি। অথচ, কুইজের আঙ্গিকে যে-ভাবে নৈর্ব্যক্তিক তথ্য পরিবেশন করা সম্ভব, তা বোধহয় অন্য কোনও আঙ্গিকে সম্ভব নয়। তাই এই গ্রন্থের স্বল্প পরিসরে একশোটি বিষয় চয়ন করে সাজানো হয়েছে নৈবেদ্যের ডালি— কলকাতার উপর নৈর্ব্যক্তিক তথ্যের একটি ‘কোলাজ’। এই একশোটি বিষয়ের প্রত্যেকটির সম্পর্কে পনেরোটি করে প্রশ্ন ও তাদের উত্তর আছে এবং এই একশোটি বিষয়কে ভাগ করা হয়েছে পঁচিশটি অধ্যায়ে।