সংস্কৃতির লড়াই, ন্যায়-নীতির লড়াই, সত্য বনাম অনৃতের লড়াই সারা দেশ জুড়ে। কিন্তু একদা তো আমরা, এই রাজ্যের অধিবাসীরা, আমাদের চেতনার মান নিয়ে গর্ববোধ করতাম। ফের নতুন করে শুরু করতে হবে, বিবেকবান বামাদর্শে বিশ্বাসীদেরই সেই দায়িত্ব নিতে হবে, তবে সবচেয়ে আগে যা জরুরি, অন্ধকারের জীবদের নিজেদের অন্তঃপুর থেকে ঝেড়ে ফেলা। অন্যথা গৃহস্থ মানুষ তাঁর বিহ্বলতা থেকে বেরিয়ে আসতে অপারগ হবেন, সমাজবিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে তো সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হওয়া যায় না। বছর আড়াই আগে লিখেছিলেন অশোক মিত্র, তাঁর ‘আরেক রকম’ পত্রিকার কলামে। ২০১৩-র গোড়া থেকে পাক্ষিক পত্রিকাটির প্রতি সংখ্যায় ‘অমিত্রাক্ষর’ নামে প্রকাশিত এই কলামটি তাঁর সজাগ ও সতেজ দৃষ্টির ধারাবাহিক অভিজ্ঞান। সেই দৃষ্টি তীক্ষ্ণ, কিন্তু তিক্ত নয়। চোখের সামনে চারপাশের দুনিয়াটা ক্রমাগত অদ্ভুত আঁধারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে, তিনি মর্মাহত, ক্ষুব্ধ, ক্রুদ্ধ, কিন্তু হাল ছেড়ে দিতে প্রস্তুত নন, মানুষী হতাশার স্বর উচ্চারণের পরমুহূর্তেই দুর্মর প্রত্যয়ে বলেন, ‘ফের নতুন করে শুরু করতে হবে।’ হয়তো সাহিত্য থেকে সমাজ, রাজনীতি থেকে সংস্কৃতি, ঘর থেকে দুনিয়া— আদিগন্ত প্রসারিত তাঁর বিশ্ববীক্ষাই তাঁকে এই আশ্চর্য মানসিক শক্তি, পুষ্টি ও ঔষধি জোগায়। প্রধানত অমিত্রাক্ষর-এর লেখাগুলি, তার সঙ্গে সমমর্মী আরও কিছু প্রবন্ধের এই সংকলন তাঁর অন্য যাবতীয় প্রবন্ধগ্রন্থের মতোই তাঁর পাঠককেও ভরসা দিয়ে বলে: ফের নতুন করে শুরু করতে হবে।