সামাজিক ইতিহাস রচনার অন্যতম উপাদান আত্মজীবনী, এ ধরনের রচনার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি কিছু সামাজিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে। জানতে পারি রচয়িতার সামাজিক অবস্থান এবং ঐ অবস্থান নির্ধারণ করতে পারলে একটি বিশেষ সমাজে, একটি শ্রেণীর সামাজিক চালচলন, মূল্যবােধ স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠবে আমাদের সামনে।
বাংলা ভাষায় আত্মজীবনীর সংখ্যা খুব বেশি নয়। রচয়িতাদের মধ্যে খ্যাত ও স্বল্পপরিচিত ব্যক্তি রয়েছেন। আবার এমন অনেকে আছেন যারা এখনও টিকে আছেন শুধুমাত্র আত্মজীবনীর মাধ্যমে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সামগ্রিকভাবে বাংলা সাহিত্যের এশাখাটি যথেষ্ট দুর্বল।
‘অন্যজীবন', বাংলা ভাষার এই শাখায় একটি উল্লেখযােগ্য সংযােজন। আত্মজীবনীতে ‘আমি’ থাকবেই কিন্তু সে ‘আমি’ যদি প্রবল হয় তবে পরিবেশ, সমাজ সব আড়াল হয়ে যায় । জাহানারা ইমামের আত্মজীবনীতে এই ‘আমি’ কখনও প্রবল হয়ে ওঠে নি এবং এ কারণেই তা উল্লেখযােগ্য। বিগত শতকের ত্রিশ ও চল্লিশ দশকের রক্ষণশীল বাঙালি মুসলমান পরিবারের একটি মেয়ের শৈশব ও প্রথম যৌবনের চোখ দিয়ে দেখা সেই সময়ের এক অনন্যসাধারণ চিত্র—অন্যজীবন।