বঙ্গভঙ্গ, বয়কট আর বোমার আন্দোলনে বাঙালি তখন জেগে উঠেছে। ছাত্ররা শুরু করেছে ‘গোলদিঘির গোলামখানা’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বয়কট। ‘বন্দিনী ভারতমাতা’র শৃঙ্খলমোচনের শপথ নিয়ে উল্লাসকর হাতে তুলে নিলেন পিকরিক অ্যাসিডের বোমা। দেশকে ভালবাসার মূল্য দিতে হল তাঁকে। প্রথমে যেতে হল আন্দামান সেলুলার জেল। পরে, মাদ্রাজের মানসিক স্বাস্থ্যনিবাসে। দীর্ঘ কারাবাসের পর দেশে ফিরে উল্লাসকর জানলেন তাঁর কিশোরবেলার প্রেমিকা আজ অন্য কারও ঘরণী। চোখের সামনে দেশ স্বাধীন হয়— দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায় ভারতবর্ষ। দ্বিখণ্ডিত হয় সোনার বাংলা। দেশ নিয়ে তার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার যখন, প্রেমিকাকে তখন ফিরে পেলেন উল্লাসকর। এমনই নাটকীয়তায় ভরা যার জীবন, আলিপুর বোমার মামলা-খ্যাত অগ্নিযুগের বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের জীবনযাপনের বিভিন্ন, বিচিত্র উপাদানকে তিন-চার বছরের শ্রমে উদ্ধার করেছেন লেখক। এবং সেই তথ্যভিত্তির নির্ভরেই রচিত হয়েছে এই জীবনোপন্যাস-অগ্নিপুরুষ। উল্লাসকর ছাড়াও অগ্নিপুরুষ-এ জীবন্ত হয়ে উঠেছেন রবীন্দ্রনাথ, বিপিনচন্দ্র পাল, অরবিন্দ ঘোষ, ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত, বারীন্দ্রকুমার ঘোষ, হেমচন্দ্র দাস প্রমুখ সমসময়ের নামী ব্যক্তিত্বরা। বাংলার কথা, বাঙালির কথা এই উপন্যাসের পরতে পরতে।